হারিয়ে যাচ্ছে কুঁড়ের ঘর
আরেফিন সহিদ,বাউফল :
একটা সময় গ্রামীণ জনপদে দরিদ্র শ্রেণীর মানুষের কুঁড়ে ঘর ছিল মাথা গোঁজার একমাত্র ঠিকানা। ৯০ দশকেও গ্রামাঞ্চলে অসংখ্য কুঁড়ে ঘর ছিল।বিশেষ করে প্রতিটি কৃষক পরিবার কুঁড়ে ঘরে বসবাস করতেন। কুঁড়ে ঘর নিয়ে নানান রকম ছড়া ও ছোট গল্প লিখেছেন বিখ্যাত লেখকরা। কিন্তু সাম্প্রতিককালে কুঁড়ে ঘর তেমন চোখে পড়ে না। ১০ গ্রাম ঘুরেও দেখা মেলে না একটি কুঁড়ে ঘর। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গ্রামের মানুষের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন সাধিত হওয়ায় এবং দীর্ঘস্থায়ী আবাসন গড়ার কারনে এখন আর তেমন দেখা মেলে না কুঁড়ে ঘর। ক্রমেই মানুষের রুচি পরিবর্তন হওয়ায় এবং মাথাপিছু আয় বেড়ে যাওয়ায় নিম্মবিত্ত পরিবার এখন আর খড় কুটো দিয়ে ঘর নির্মাণ করেন না। বর্তমানে গ্রামের অনেকেই টিন দিয়ে ঘর তৈরি করেন। আবার কেউ সেমিপাকা বাড়ি নির্মাণ করছেন।
নবগঠিত বাউফল উপজেলার চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের চর ব্যারেট গ্রামের শাহআলম সিকদার বলেন, আমি ৩০ বছর ধরে এখানে বসবাস করছি। আমার গ্রামের প্রতিটি ঘর ছিল খড়কুটো দিয়ে তৈরি। কিন্তু বর্তমানে এখানকার প্রতিটি ঘর টিনের তৈরি। তিনি বলেন, মানুষের আয় বেড়েছে এবং রুচির পরিবর্তন হয়েছে। তাই এখন আর কেউ কুঁড়ে ঘর তৈরি করেন না। ওই ইউনিয়নের কৃষক ফারুক মৃধা বলেন, আমি এক সময় কুঁড়ের ঘরে বসবাস করতাম। কিন্তু এখন আমার আর্থিক অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। তাই আমি টিনশেড ঘর তৈরি করেছি। তিনি বলেন, আমার ইউনিয়নে প্রায় আড়াই হাজার পরিবার রয়েছে। এদের মধ্যে অধিকাংশই গরীব। বর্তমানে এখানে কুঁড়ের ঘর নেই বলা যায়। যারা গরীব তারাও টিন দিয়ে তৈরি ঘরে বসবাস করেন। বাউফলের উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রাজিব বিশ্বাস বলেন, কুঁড়ের ঘর প্রতি বছর মেরামত করতে হয়। আর টিনের তৈরি ঘর ২০-২৫ বছরেও মেরামতের প্রয়োজন হয় না। এ কারনে অনেকে টিন দিয়ে ঘর তৈরি করছেন। বাউফলের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আল আমিন বলেন, মানুষের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন হয়েছে। আগের চেয়ে মাথাপিছু আয় বেড়েছে। নিম্ম ও মধ্য বিত্ত শ্রেণীর মানুষের রুচির পরিবর্তন হয়েছে। তাই এখন গ্রামাঞ্চলে কুঁড়ের ঘর দেখা যায় না।
Comments (0)
Facebook Comments (0)